জীবন হলো স্বল্প সময়ের একটি সফর ও বিনিয়োগ স্থান। এই সফরে বিনিয়োগ করে ভ্রমনকারীকে লাভবান হতে হবে। পঞ্চম শতাব্দীতে আরব উপদ্বীপের মনুষ্য সমাজ সার্বিক দৃষ্টিকোন থেকে ক্ষতিকর অবস্থার ভিতর দিয়ে সময় অতিবাহিত করছিল। এ ক্ষতিকর অবস্থা থেকে মানুষকে বাচাঁনোর কোন দিশা আরববাসীর জানা নেই। এই অবস্থা হতে উত্তরনের জন্য সময়ের শপথ করে কুরআন (১০৩: ০১-০৩) বলছে, সময়ের শপথ, নিশ্চয় সকল মানুষ ক্ষতিকর অবস্থার ভিতর আছে। তবে ঈমান, আমলে সালেহ, হক ও সবর এই ৪ টি কাজ অনুশিলনের মাধ্যমে মানুষ ইহজীবন ও পরজীবনে সফল জীবনের অধিকারি হতে পারে।
সফলতার ইনডিকেটর:
০১. ঈমান হলো সফলতার প্রথম টিপস্। ঈমান মানে বিশ্বাস, এই শব্দটি সংক্ষিপ্তভাবে আল্লাহর একত্ব, ফেরেস্তাকুল, আসমানি কিতাব, নবি-রাসুল, বিচার দিবস, পুনরুত্তান ও তকদিরে বিশ্বাসকে অর্ন্তভুক্ত করে। এই ৭ টি বিষয়ের শর্তহীন বিশ্বাসের মাধ্যমে কুরআন মানুষকে একটি ফ্লাটফর্মে ঐক্যবদ্ধ করে। হাদিছ অনুসারে ঈমানের ৬৯টি শাখা রয়েছে, ইহার সর্বত্তোম শাখা হলো ‘লা-ইলাহা-ইল্লাহ’ মানে আল্লাহই একমাত্র আরাধ্য। সর্ব নিম্ন স্তরে রয়েছে, ‘ ইমাতাতুল আজা আনিত তারিক’ অর্থ হলো ‘রাস্তা থেকে কষ্টদায়ক বস্তু দূর করা’।
০২. আমলে সালেহ হলো সফলতার দ্বিতীয় টিপস্। যারা আমলে সালিহ (কল্যাণকর কাজ) করবে তারাই সফল। আমলে ছালিহ বলতে নিজের ও অপরের জন্য কল্যানকর কাজ নিষ্পন্ন করাকে বুঝায়। নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত, ইনসাফ, আত্মীয়কে সাহায্য করা, অন্যায় ও ফাহিসা কাজ থেকে দূরে থাকা, আইনের অনুগত থাকা, অসুস্থকে সেবা দেয়া, ক্ষুধার্তকে খাবার দেয়া, অনাথ ও গরীবদের স্বার্থ রক্ষা করা, উপদেশ প্রদান, সাদকা জারিয়া সংক্রান্ত কাজ, শিক্ষা বিস্তারে সহয়তা করা ইত্যাদি কাজকে কুরআন কল্যাণকর কাজ হিসাবে চিহ্নিত করেছেন।
০৩. হকের উপর নিজে অটল থাকা ও অন্যকে হকের উপর থাকতে প্ররোচিত করা সফলতার তৃতীয় টিপস। হক মানে সত্য, স্বর্গীয় বাণি, ন্যাযতা, বাস্তবতা, অধিকার ইত্যাদি। হক্ আল্লাহর একটি গুণবাচক নাম। আরবিতে শব্দটির বহুমাত্রিক ব্যবহার দেখা যায়। এটি সিরাতুল মুস্তাকিমের ১০টি বৈশিষ্টের সাথেও জড়িত। হক মানে যার যা প্রাপ্য তাকে তা দেয়া, সকলের জন্য কল্যাণকর কাজ করা, অধিকার বিষয়ে মানুষকে সচেতন করা, অন্যায়ের প্রতিরোধে কাজ করা, সম্পদ ও সেবা বন্ঠনে সুনির্দিষ্ট মুলনীতির উপর থাকা, আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করা।
০৪. ধৈর্য হলো সফলতার চতুর্থ টিপস। ব্যক্তি ইস্পীত লক্ষ্যে পৌঁছাতে নিজে ধৈর্য ধরবে এবং অপরকে ধৈর্যের অনুশিলনে প্ররোচিত করবে। ধৈর্য মানে লেগে থাকা, নিরাশ না হওয়া, বিফল হলেও পুনরায় শুরু করা। অভিজ্ঞতায় দেখা যায় যে, রাতারাতি কোন সফলতা অর্জন করা যায় না। ইহার জন্য প্রয়োজন ধৈর্য। মক্কার ১৩ বৎসরের মিশনে মুহম্মদ স. তাঁর শূণ্য সফলতায় ভেঙ্গে পড়েন নি। তিনি মদিনায় আশ্রয় নিয়ে মিশাখে মদিনা, সুলেহ হোদাবিয়া ইত্যাদি প্রক্রিয়ায় ১০ বছর অক্লান্ত পরিশ্রম করে সফল বীর-নেতা-পয়গাম্বর হিসাবে মক্কায় প্রত্যাবর্তন করেন। আত্মবিশ্বাস, ধৈর্য, আল্লাহর উপর তাওয়াক্কুল তাঁকে সফলতা উপহার দিয়েছিল। উপরোক্ত ৪টি টিপসে্র উপর আমল করে সকল মানুষ সফল জীবন লাভ করতে পারে।
ভাল লাগলে লিখাটি শেয়ার করুন।